ওয়েল্ডিং প্রযুক্তিবিদদের মতে, দোষমুক্ত কোন নিখুঁত ওয়েল্ডিং বেস মেটালের চেয়ে বেশি শক্তিশালী জোড় তৈরি করে। ওয়েল্ডিং এ নানা প্রকার যান্ত্রিক বা অযান্ত্রিক কারণে দোষ বা ডিফেক্ট হতে পারে। ফলে সহজেই তা ভেঙে যায়। যার ফলে ওয়েল্ডিং করার উদ্দেশ্যই ব্যহত হয় একেই ওয়েল্ডিং এর ত্রুটি বলে। কিন্তু ওয়েল্ডিং জোড় ত্রুটি অবস্থায় কখনও রাখা উচিত না। দোষ-ত্রুটিগুলো ধরা পড়লে সাথে সাথে তার প্রতিকার করে ত্রুটিমুক্ত করা উচিত। অনেক সময় ওয়েল্ডারদের দক্ষতার অভাবে বা অসতর্কতাবশত কাজের অবহেলায় ওয়েল্ডিং-এ প্রচুর দোষ থেকে যায়। তাদের জানতে হবে ওয়েল্ড জোড়ের ত্রুটি-বিচ্যুতি খুব ক্ষতিকারক। যে কোন মুহূর্তে জোড় স্থান ভেঙে যেতে পারে বা জোড়ার দক্ষতা কমে যেতে পারে। অনেক সময় ওয়েল্ডিং জোড়ে সামান্য ত্রুটি হয়ে থাকে, যা মেরামত যোগ্য। সামান্য মেরামতের ফলে উক্ত জোড় শক্তিশালী জোড় হবে। শুধু জোড় স্থান পরীক্ষার মাধ্যমেই ত্রুটি শনাক্ত করা যায়। আবার অনেক ত্রুটি আছে যেমন ফাটল, যা একবার দেখা দিলে তা বাড়তেই থাকবে। কোন জোড়ের ফাটল দেখা দিলে তা কেটে ফেলে নতুনভাবে জোড় দিতে হবে। পরীক্ষা ছাড়া ওয়েল্ড জোড়ের ত্রুটি-বিচ্যুতি আদৌ শনাক্ত করা যায় না। কিছু কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে আদৌ ত্রুটি-বিচ্যুতি গ্রহণযোগ্য নয়, যেমন উড়োজাহাজ, সমুদ্রগামী জাহাজ, প্রেসার ট্যাংক প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ কাজের জোড় ১০০% নিখুঁত হয়, এ সমস্ত কাজের জোড় নিখুঁত না হলে অর্থাৎ কোন ত্রুটি থেকে গেলে যে কোন মুহূর্তে প্রাণনাশক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এ ধরনের জোড়ে অধ্বংসাত্মক পরীক্ষা দ্বারা জোড় ত্রুটিমুক্ত কীনা তা নিশ্চিত হতে হয়। এছাড়াও ক্রুড ওয়েল, রিফাইনারি, গ্যাস লাইন, গ্যাস প্যান্ট, পাওয়ার স্টেশন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ত্রুটি যুক্ত জোড়ের প্রয়োজন। এক্ষেত্রেও অধ্বংসাত্মক পদ্ধতিতে জোড় পরীক্ষা করে ত্রুটি- বিচ্যুতি শনাক্ত করা হয় এবং মেরামতযোগ্য ত্রুটি-বিচ্যুতি মেরামত করা হয়। এমতাবস্থায় শুধু পরীক্ষর মাধ্যমেই ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করা যায়। ত্রুটি-বিচ্যুতি শনাক্ত করা গেলে তার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজতর হবে। আর সে জন্যই ওয়েল্ডিং-এর দোষ-ত্রুটি সম্বন্ধে জ্ঞানার্জন করে তা থেকে ওয়েল্ডিং স্থানকে মুক্ত রাখবার চেষ্টা করতে হবে।
আরও দেখুন...